March 4, 2021, 12:30 am
আয়-রোজগারের আশায় কিছু খাবার-সামগ্রী নিয়ে আন্দামান-নিকোবর থেকে সমুদ্রে যাত্রা করেছিলেন অমৃত কুজুর (৪৯) ও তার বন্ধু দিব্যরঞ্জন। উদ্দেশ্য ভাসমান জাহাজে সেসব খাবার-সামগ্রী বেচবেন। হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়লো তাদের নৌকা। তারপর সব শেষ। দিশা হারিয়ে দুই বন্ধুর তখন বেঁচে থাকার লড়াই শুরু।
উত্তাল সমুদ্রের বুকে এদিক থেকে ওদিক ঘুরপাক খেতে থাকলো তাদের নৌকা। খাবার নেই, পানি নেই। এমন পরিস্থিতির সঙ্গে ক’দিন লড়াই করলেও বাঁচতে পারেননি দিব্যরঞ্জন। তবু লড়াই চালিয়ে গেছেন অমৃত। এই মনোবলই শেষ পর্যন্ত জিতিয়ে দিয়েছে অমৃতকে। ২৮ দিন পর তার নৌকা গিয়ে ভিড়েছে উড়িষ্যার খিরিশাহি গ্রামের উপকূলে।
অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি উঠে এসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে। সংবাদমাধ্যম বলছে, ১৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের এক দ্বীপ থেকে বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে উড়িষ্যায় ভেসে আসা অমৃতকে এলাকাবাসী যখন উদ্ধার করেছেন, তখন তার হাঁটার মত অবস্থা ছিল না। প্রাণটুকু বেঁচে আছে কেবল।
পুলিশ সূত্র জানায়, অমৃত আন্দামান-নিকোবরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহিদ দ্বীপের বাসিন্দা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তারা বিক্রির জন্য খাবার-সামগ্রী নিয়ে সাগরে নৌকা ভাসিয়েছিলেন। নৌকায় ছিল পাঁচ লাখ টাকার জিনিস। প্রথম ক’দিন ভালোই চলছিল। হঠাৎ সমুদ্রে ঝড় শুরু হয়। এসময় তাদের নৌকা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছিন্ন হয়ে যায় ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন। পাল-ছেঁড়া নৌকা দিাঁ হারিয়ে ভেসে বেড়াতে থাকে। মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে জ্বালানি ও খাবার মিললেও ফের ঝড়ের কবলে পড়েন তারা। নৌকায় পানি ঢুকতে থাকে হু হু করে। সব জিনিসপত্র ভেসে যায়। বৃষ্টির পানি খেয়ে অমৃত বাঁচলেও বন্ধু দিব্যরঞ্জনকে বাঁচাতে পারেননি। তবে প্রায় এক মাস এভাবে লড়াই করায় অমৃতের মনোবলের প্রশংসা করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
Leave a Reply